যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী : ধৃত ২ যুবক

28th February 2021 8:27 pm বর্ধমান
যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মঘাতী ছাত্রী : ধৃত ২ যুবক


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : কনেযাত্রী বোঝাই বাসে ছাত্রীর উপর যৌন ও  আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল দুই যুবক। ধৃতরা হল বিকাশ সরেন ও সুরোজ মুর্মু । পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার সাহাপুর গ্রামে বিকাশের বাড়ি ।অপর ধৃত সুরোজের বাড়ি সাহাপুরের পাশের গ্রাম মুহিন্দরে । শনিবার রাতে জামালপুর থানার পুলিশ বাড়ি থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে । গ্রেপ্তারি এড়াতে সুগুল মুরমু নামে অপর এক যুবক এখনও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে ।  আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ও পক্সো আইনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ রবিবার দুই ধৃতকে  পেশ করে বর্ধমান আদালতে । ভারপ্রাপ্ত সিজেএম রঞ্জিনি কাশ্যপ দুই ধৃতকে বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে সোমবার তাদের পক্সো আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন । 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগিয়েছে , বছর ১৫ বয়সী আদাবাসী পরিবারের ওই  ছাত্রীর আদি বাড়ি হুগলীর বৈকন্ঠপুর এলাকায়।  জামালপুরের পাড়াতল ১ পঞ্চায়েতের মুহিন্দর গ্রামের ভাগার পাড়ায় ছাত্রীর মামার বাড়ি ।  লেখাপড়া শেখার জন্য ছাত্রীর মা-বাবা ছোট বয়সেই তাকে মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ।  সে স্থানীয় পর্বতপুর উচ্চ বালিকা বিদালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ছিল । অভিযোগ এলাকার যুবকদের নোংরামির জন্য সে আত্মঘাতী হতে বাধ্য হয় । ছাত্রীর দাদু পুলিশকে অভিযোগে  জানিয়েছে ,  গত ২ ফেব্রুয়ারি তাঁদের পাড়ার এক তরুণীর বিয়ের কোনে যাত্রীদের সঙ্গে তাঁর নাতনিও বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যায় । ওই দিন রাতে সবার সঙ্গেই বাসে চড়ে তাঁর নাতনিও  মুহিন্দর গ্রামের বাড়িতে ফিরছিল। ওই দিন বাসের পিছনের শিটে বসে আসতে আসতে ছাত্রীটি  ঘুমিয়ে পড়ে। অভিযোগ সেই সময়ে একই বাসে সওয়ার থাকা এলাকার যুবক সুরোজ  মুর্মু জরোপূর্বক ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতন  শুরু করে । ছাত্রীর চিৎকার শুরু করলে বাসে থাকা অন্য কোনে যাত্রীরা ঘটনার  প্রতিবাদ করেন।  তখনকার মতো সুরোজ বিরত হয় । পরে ওই দিন রাতে ছাত্রী  মুহিন্দর গ্রামে মামার বাড়ি ফিরে এসে  যখন ঘরে ঘুমাচ্ছিল তখন ফের সুরোজ এবং তাঁর দুই স্থানীয় বন্ধু  বিকাশ সরেন ও সাগুল মুর্মু মিলে সারারাত ছাত্রীকে ঘুমাতে না দিয়ে উত্যক্ত করে যায়।ছাত্রীর দাদু বলেন , “যুবকদের এমন নোংরা আচরণ মেনেনিতে না পেরে অপমানিত হয়ে তাঁর নাতনি পরদিন সকাল থেকে  মনমরা হয়েথাকে ।এরপর সন্ধ্যায় ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে  তাঁর নাতনি গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঘরের সিলিংয়ের কাঠামোয় ঝুলে পড়ে আত্মঘাতী হয় ।” খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই পুলিশ বাড়িতে এসে  মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় । নাবালিকা নাতনির এমন মৃত্যুর জন্য এলাকার তিন যুবককে দায়ী করে মৃতার দাদু জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।সেই কথা জানতে পেরে যুবকারা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয় । দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ অভিযুক্তদের খৌঁজ চালানো শুরু করে । অভিযুক্তদের মধ্যে দুই জনকে শনিবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । তিন যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসী । 


 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।